বেডরুম সাজানোর সময় এই বিষয়গুলো মাথায় রাখুন!
সারাদিনের কর্মব্যস্ততার ক্লান্তি-অবসাদ দূর করতে চাই ঘরের সুন্দর, সুস্থ ও মনোরম পরিবেশ। এই ঘরই আমাদের দিতে পারে আরেকটি কর্মব্যস্ত দিনের প্রেরণা। তাই ঘরের পরিধি, আয়তন যাই হোক না কেন, এটাকে সুচারুভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখতে পারলে তা সীমার মাঝেও এনে দেয় অসীমের আনন্দ। সুখের নীড়ের ইন্টেরিয়র কেমন হবে তা নির্ভর করে ঘরের অবস্থান ও স্পেসের উপর। দু’ উপায়ে নবদম্পতি তাদের অন্দরকে সাজাতে পারেন। প্রথমত নিজেরাই নিজেদের রুচি ও চাহিদা অনুযায়ী বাজার থেকে প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে এনে মনের মতো করে সাজাতে পারেন তাদের নীড়।
দ্বিতীয়ত কোনো ইন্টেরিয়র ডিজাইনার অথবা ইন্টেরিয়র আর্কিটেক্ট দিয়েও তাদের সুখের নীড় মনের মতো করে সাজিয়ে নিতে পারেন। ফার্নিচার ইন্টেরিয়রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ঘরের মাপ, রং আর উপকরণের উপর নির্ভর করে সাজানো ফার্নিচার আপনার ঘরকে করে তুলবে অপরের কাছে ঈর্ষণীয়। নতুন সংসারের ফার্নিচার, হাউজহোল্ড এক্সেসরিজ সবই হবে সিম্পল, লাইট, কন্টেম্পোরারি। পুরো ঘর ফার্নিচার দিয়ে না বোঝাই করাই ভালো। অন্তঃপুর হোক একটু খোলামেলা, উপভোগ্য। ঘরের সব কিছুতেই যেন একটু ভালোবাসা-ভালোলাগা, রোমান্স এবং কোমলতার ছোঁয়া থাকে।
প্রবেশ পথ : ঘরের প্রবেশ পথটাতেও যেন ভালোবসার ছোঁয়া থাকে। হয়ে উঠে মোহনীয় তাই প্রবেশপথের কোনো এক দেয়ালে টাঙিয়ে দিতে পারেন লাভ শেপের মিরর। একপাশে রাখা যেতে পারে কৃত্রিম ঝরনা। ডিজাইন অনুযায়ী আলোর ব্যবস্থা। আলো-আঁধারির ঝরনা সৃষ্টি করবে একটু মায়াবী পরিবেশ। পটারিতে রাখতে পারেন ফণীমনসা, পাতাবাহার, পাথরকুচি বা মানিপ্ল্যান্ট। দেয়ালে মাটির পাত্রে ঝুলিয়ে রাখতে পারেন গাছগাছালি।
অন্দরের ফার্নিচার : বসার ঘরে লেজি বয় টাইপের সোফা, লো-সেটিং থাকতে পারে। মাস্টার বেডে নান্দনিক ডিজাইনের বেডের সাথে সাথে দু’জনে যেন বসে গল্প করার মতো আলাদা বসার জায়গা থাকে। ড্রেসিং টেবিল, ওয়ার্ড্রোব, ক্লোজেট ইত্যাদি তো থাকবেই। তবে তা যেন ঘরের সাথে মানানসই হয়। ডাইনিংয়ের কাজটা কিচেনেও সেরে ফেলতে পারেন সুবিধামতো। তবে ডাইনিং স্পেসে ফোর সিটের একটা ডাইনিং থাকতে পারে। বারান্দা থাকলে অবসর সময়ে বসে গল্প করা ও প্রকৃতিকে উপভোগ করার জন্য কমফোর্ট সিটিং প্লেস (যেমন—রকিং চেয়ার, লো হাইটের সিটিং) হলে অবসর আরেকটু উপভোগের হবে।
পর্দা, কুশন, বেড কভার : ঘরের সকল স্থানে যেন ভালোবাসার ছোঁয়া থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বেড কভার, কুশন কভার, জানালার পর্দা ইত্যাদিতেও যেন ভালোবাসা, আনন্দ, জীবনের এবং উত্সবের ছোঁয়া থাকে। বেড কভার, কুশন কভার, পর্দা যেন ঘরের দেয়ালের রঙের সাথে সময়ের সাথে মানানসই হয়। বেড কভার হবে লাল, হলুদ, কমলা, নীল ইত্যাদি রঙের। তবে তা যেন চোখে জ্বালা না ধরায়। এজন্য এসব রঙের বিভিন্ন শেডের বেড কভার ব্যবহার করা যেতে পারে। সুতি, ব্লক, অ্যাপ্লিক, স্ক্রিন প্রিন্ট, তাঁত, সিল্ক ও নকশি কাঁথা ইত্যাদি নানা ডিজাইন থেকে বেছে নিতে পারেন আপনারটা। আনস্টিচ ফাইবারের তৈরি সোফা, কুশন এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। ফোমের তৈরি নরম, কোমল কুশন ব্যবহার করা উত্তম। সোফা, কুশন কভার লাইট ইয়োলো, গ্রিন, অরেঞ্জের শেড বা মাল্টিকালার হতে পারে। পর্দাগুলো লাইট কালারের হতে পারে। তবে তা যেন সোফা কুশন কভার এবং দেয়ালের রঙের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। বেডরুমের ক্ষেত্রে পর্দা লাইট পিংক হতে পারে যদি দেয়াল পিংক কালারের হয়। বেডরুমের পর্দা দুই লেয়ারের হলে ভালো হয়। এতে বাইরের তাপ ভেতরে বেশি আসতে পারে না। ঘরের অন্যান্য স্থানে দেয়াল ও ফার্নিচারের সাথে সাদৃশ্য রেখে পর্দা ব্যবহার করতে হবে।
বেডরুম সাজানোর জন্য এই টিপসগুলো জেনে রাখুন
সারাদিন কাজ করার পর যে ঘরে ঢুকে আপনার ক্লান্তি দূর হয়ে যায় সেটি হচ্ছে আপনার বেডরুম। বেডরুম এমন হওয়া চাই যেখানে এলেই আপনার মন প্রশান্তিতে ভরে যাবে। তাই কেমন হতে পারি আপনার মনের মত বেডরুম যে বিষয়ে আমরা কিছু টিপস প্রদান করছি।
– আপনার বেডরুম যাতে একটু বড় হয় সেটা সবসময় মাথায় রাখতে হবে।
– এই রুমের সাথে যেন একটা বারান্দা থাকে।
– আয়না ও লাইট এমনভাবে সেট করুন যাতে করে ঘরের আয়তন বড় মনে হয়।
– হালকা ডিজাইনের খাট, আলমারি, ড্রেসিংটেবিল ও অন্যান্য আসবাবপত্র রাখুন।
– বিভিন্ন ধরনের রঙ বেরঙের কুশন ঘরে রাখুন।
– মেঝেতে কার্পেট ব্যাবহার করুন।
– এখন একটু নিচু খাট বেশি চলছে। তাই ঘরে নিচু খাট রাখুন।
– বেডরুমে টিভি না রাখাই ভালো।
– গান শোনার ব্যবস্থা রাখুন।
– বারান্দায় টবে কিছু গাছ রাখতে পারেন।
– প্রয়োজনীয় জিনিস রাখার জন্য দেয়ালে কাঠের শেলফ আপনার ঘরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলবে।
– ঘরে একটু আরাম করে বসার জন্য ইজি চেয়ারের বেবস্থা করতে পারেন।
– দেয়ালে কিছু ছবি রাখুন।
– এসব বিষয়ের প্রতি নজর রাখলেই আপনার বেডরুম হতে পারে বেশ আভিজাত্যপূর্ণ। তবে সবসময় মনে রাখবেন ঘরে অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র না রাখাই ভালো। এতে করে ঘরের জায়গা যেমন বেশি হবে তেমন দেখতেও ভালো লাগবে। এছাড়াও ঘরের রঙ ও আলোর উপরেও বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।
তথ্য এবং ছবি : গুগল